ভার্গিস কুরিয়েন

Lakshmikanta Manna:


{{Infobox person
<!–NOTE: please add the title “Dr” to his name: see [[Wikipedia:Manual of Style (biographies)#Academic titles]]–>| honorific_prefix = ”’ভারতের শ্বেত বিপ্লবের জনক ”’
| name = ভার্গিস কুরিয়েন
| honorific_suffix = [[Padma Vibhushan|PV]], [[Padma Bhushan|PB]], [[Padma Shri|PS]], [[Order of Agricultural Merit|OAM]]
| image = [[File:Dr. V. kurien cropped.JPG|220px]]
| image_upright =
| birth_date = {{ জন্ম_তারিখ|df=yes|1921|11|26}}
| birth_place = [[কালিকট]], [[মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি]], [[ব্রিটিশ ভারত]] (বর্তমানে[[কালিকট]], [[কেরল]], ভারত)
| death_date = {{মৃত্যু_তারিখ ও বয়স |2012|09|09|1921|11|26|df=yes}}
| death_place = [[নাদিয়াদ]], [[গুজরাট]], ভারত
| alma_mater = {{ubl|[[মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়]]|[[মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি]]}}
| occupation = মহাপ্রবন্ধক, পরবর্তীতে চেয়ারম্যান আমুল, চেয়ারম্যান –ন্যাশনাল ডেয়ারী ডেভেলপমেন্ট বোর্ড এবং ইন্সটিটিউট অফ রুরাল ম্যানেজমেন্ট, আনন্দ
| caption = ডক্টর ভার্গিস কুরিয়েন
| other_names = ভারতে শ্বেত বিপ্লবের জনক <ref name=”Times”>{{cite web|url=http://articles.timesofindia.indiatimes.com/2012-09-09/india/33713090_1_verghese-kurien-father-of-white-revolution-milk-powder |title=Father of white revolution Verghese Kurien dies |work=The Times of India |access-date=9 September 2012}}</ref><br/>ভারতের মিল্কম্যান বা দুধওয়ালা
| awards = বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার (১৯৮৯) <br /> অর্ডার অফ এগ্রিকালচারাল মেরিট (১৯৯৭) <br /> [[পদ্মবিভূষণ]] (১৯৯৯) <br /> [[পদ্মভূষণ]] (১৯৬৬) <br /> [[পদ্মশ্রী]] (১৯৬৫) <br/> [[ রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কার]] (১৯৬৪)
| homepage = {{URL|http://www.drkurien.com/}}
}}

ড.”’ভার্গিস কুরিয়েন”'(২৬ নভেম্বর ১৯২১ – ৯ সেপ্টেম্বর ২০১২) ছিলেন ভারতে শ্বেত বিপ্লবের জনক হিসাবে পরিচিত এক সামাজিক উদ্যোগপতি। <ref name=”Kurien Reference2″>{{সংবাদ উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://food.ndtv.com/food-drinks/google-doodle-honours-dr-verghese-kurien-on-national-milk-day-1247783|শিরোনাম=Verghese Kurien on Google Doodle for National Milk Day|তারিখ=26 November 2015|সংগ্রহের-তারিখ=10 March 2021|প্রকাশক=NDTV Food|ভাষা=en}}</ref> <ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|প্রকাশক=(World Food Prize Foundation)|শিরোনাম=1989: Dr. Verghese Kurien|ইউআরএল=http://www.worldfoodprize.org/en/laureates/19871999_laureates/1989_kurien/|সংগ্রহের-তারিখ=13 September 2012}}</ref> তারই উদ্যোগে এবং তার ‘বিলিয়ন লিটার আইডিয়া (অপারেশন ফ্লাড নামে পরিচিত) –  শিল্প মডেলে ভারত দুধের ঘাটতি দেশ থেকে আমেরিকার অগ্রগতিকে ছাপিয়ে বিশ্বের বৃহত্তম এবং পয়লা নম্বর  উৎপাদনকারী দেশ হিসাবে  পরিণত হয়েছে।, <ref>Archived at [https://ghostarchive.org/varchive/youtube/20211211/xmTieI_ry1o Ghostarchive] and the [https://web.archive.org/web/20120909185656/http://www.youtube.com/watch?v=xmTieI_ry1o&gl=US&hl=en Wayback Machine]: {{ওয়েব উদ্ধৃতি|প্রকাশক=World Food Prize Foundation (1989-7m 47s)|শিরোনাম=1989 Laureate: Verghese Kurien|ইউআরএল=https://www.youtube.com/watch?v=xmTieI_ry1o}}</ref> <ref name=”Katar”>{{বই উদ্ধৃতি|ইউআরএল=https://books.google.com/books?id=-wXsRWxpjPAC&pg=PA201|শিরোনাম=Rural Development: Principles, Policies and Management|শেষাংশ=Singh|প্রথমাংশ=Katar|বছর=1999|প্রকাশক=SAGE|পাতাসমূহ=201|আইএসবিএন=81-7036-773-5}}</ref> তার ‘শ্বেত বিপ্লবের কর্মপন্থা’ আজও বিশ্বের বৃহত্তম কৃষি উন্নয়ন কর্মসূচি নামে খ্যাত। দুগ্ধ উৎপাদন বর্তমানে ভারতের বৃহত্তম স্বনির্ভর শিল্প হয়ে উঠেছে। এ ছাড়াও, দেশে ভোজ্য তেলের ক্ষেত্রও সঠিক দিশায়  স্বনির্ভরতা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। সেজন্য তিনি আমুল, গুজরাট কোঅপারেটিভ মিল্ক মার্কেটিং ফেডারেশন, ইন্সটিটিউট অফ রুরাল ম্যানেজমেন্ট, আনন্দ, ন্যাশনাল ডেয়ারি ডেভেলপমেন্ট বোর্ড সহ প্রায় তিরিশটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। <ref>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শেষাংশ=Pendleton|প্রথমাংশ=Andrew|শেষাংশ২=Narayanan|প্রথমাংশ২=Pradeep|প্রকাশক=Christian Aid|পাতা=35|শিরোনাম=The white revolution : milk in India|ইউআরএল=http://www.bournemouth.ac.uk/about/the_global_dimension/teaching_resources/trade/Taking%20liberties%20-%20Poor%20people,%20free%20trade%20and%20trade%20justice.pdf|সংগ্রহের-তারিখ=11 September 2012|ওয়েবসাইট=Taking liberties: poor people, free trade and trade justice}}</ref>

কুরিয়েন মূলত গ্রামীণ শিল্পকে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে আধুনিক শিল্পের রূপ দিয়ে সরকারি কোনো সাহায্য ছাড়াই এগিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন এবং স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে কৃষকদের তথা উৎপাদনকারীদের এবং পেশাদারদের দ্বারা সেগুলির পরিচালনা অর্পণ করতে চেয়েছিলেন।

জীবনব্যাপী ভারতের ডেয়ারি ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে [[ভারত সরকার]] তাকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক [[পদ্মবিভূষণ]] সম্মানে ভূষিত করে। সেই সঙ্গে কমিউনিটি লিডারশিপের জন্য ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কার ফাউন্ডেশন [[রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কার]] প্রদান করে। ভারতের ডেয়ারি অ্যাসোসিয়েশনও ২০১৪ খ্রিস্টাব্দ হতে তার জন্মদিন ”’জাতীয় দুগ্ধ দিবস”’ হিসাবে পালন করছে।<ref name=”abp”></ref>

== জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন এবং শিক্ষা ==
ভার্গিস কুরিয়েন ১৯২১ খ্রিস্টাব্দের ২৬ নভেম্বর ব্রিটিশ ভারতের [[মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি|মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির]] অধুনা  কেরল রাজ্যের কোঝিকোড় তথা [[কালিকট| কালিকটের]]  এক সিরিয়ান অ্যাংলো খ্রিস্টান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা  পুথেনপাড়াক্কল কুরিয়েন ছিলেন সরকারী হাসপাতালের একজন সিভিল সার্জেন এবং মাতা  ছিলেন উচ্চশিক্ষিত একজন মহিলা এবং অসামান্য এক পিয়ানোবাদক।  ভার্গিস কুরিয়েন প্রথমে গোবীচেট্টিপালায়ামের ডায়মন্ড জুবিলি হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলে পড়াশুনা করে ১৪ বছর বয়সে মাদ্রাজের লোয়োলা কলেজে ভর্তি হন। ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে সেখান থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতক হন। পরে ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্নাতক ডিগ্রি লাভ  করেন মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত গিন্ডি কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে। তার ২২ বৎসর বয়সে পিতার মৃত্যু হলে, কুরিয়েন ও  তার মা  ত্রিচুরে এক কাকার বাড়িতে  যান। কুরিয়েন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাঁর মায়ের ইচ্ছায় তিনি জামশেদপুরের টাটা স্টিল টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে যান এবং ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে সেখান  স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর ডেয়ারি ইঞ্জিনিয়ারিং-এ পড়াশোনার আগ্রহে  ব্যাঙ্গালোরের ইম্পেরিয়াল ইনস্টিটিউট অব অ্যানিম্যাল হাসবেন্ড্রিতে কিছুদিন কাটান। পরে ভারত সরকারের বৃত্তি লাভ করে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে [[যুক্তরাষ্ট্র| যুক্তরাষ্ট্রের]] মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটিতে যোগ দেন এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।<ref name=”ABP”>{{ওয়েব উদ্ধৃতি| শিরোনাম = ‘আমুল’ বিপ্লবের ইতিহাস রেখে বিদায় ‘দুধওয়ালা’র| ইউআরএল = http://archives.anandabazar.com/archive/1120910/10bus1.html| সংগ্রহের-তারিখ =২০২২-০৯-১১}}</ref>

== ব্যক্তিগত জীবন, পরিবার এবং বিশ্বাস ==
ডক্টর ভার্গিস ১৯৫৩ খ্রিস্টাব্দের ১৫ জুন সুসান মলি পিটারকে বিবাহ করেন। তাঁদের একমাত্র কন্যাসন্তান নির্মলা কুরিয়েন। খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী কুরিয়েন পরবর্তীকালে নাস্তিক হয়ে যান। ভার্গিস কুরিয়েনের এক পৌত্র হল সিদ্ধার্থ।<ref name=”Kurien Reference2″></ref>ডক্টর কুরিয়েন স্বল্প সময়ের অসুস্থতায় ২০১২ খ্রিস্টাব্দের ৯ সেপ্টেম্বর শনিবার রাত সওয়া একটায় গুজরাটের মুলজিবাই হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার স্ত্রী সুসান মলিও ২০১২ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ডিসেম্বর  মুম্বাইতে মারা যান।

==অবদান==
{{multiple image
| align = right
| direction =
| width = 350
| image1 = Kurien, Tribhuvandas & Dalaya.jpg|636x429px
| alt1 =
| caption1 = Kurien, Patel, and Dalaya at their dairy plant at Anand in 1970
| image2 =
| alt2 =
| caption2 =
| footer =
| total_width =
}}

১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দের ১৩ মে ভার্গিস কুরিয়েন দেশে  ফিরে আসেন। ভারত সরকারের প্রদত্ত বৃত্তির জন্য তাকে গুজরাটের কাইরা জেলার আনন্দ নামক এক স্থানে পাঠানো হয় দুগ্ধবিভাগের এক আধিকারিক হিসাবে। কিন্তু তিনি লক্ষ্য করেন কৃষকেরা তথা দুগ্ধ-উৎপাদকেরা শোষিত ও প্রতারিত হচ্ছেন চতুর ব্যবসায়ীদের দ্বারা। ছয় মাসের চুক্তির কাজ শেষ হতে কাজ ছেড়ে দিতে চাইলেন। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দা ও কাইরা জেলা দুগ্ধ উৎপাদক সমবায়ের প্রধান ত্রিভুবনদাস কিশিভাই প্যাটেলের  অনুরোধে তিনি সেখানে থেকে যান এবং প্রকৃতপক্ষে এক বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলেন। সেসময় সমবায় প্রথাকে কাজে লাগিয়ে দুগ্ধ-উৎপাদকদের জীবনে পরিবর্তন আনায় সচেষ্ট ছিলেন [[বল্লভভাই প্যাটেল| সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলও]]। তিনিই কুরিয়েনকে দুগ্ধ প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য অনুরোধ করেন। <ref name=”ABP” /> তিনি খেদা জেলার দুটি গ্রামের সমবায় প্রতিষ্ঠান নিয়ে ত্রিভুবনদাস কিশিভাই প্যাটেলের সহায়তায় ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে গ্রামবাসীদের দেওয়া  “আনন্দ মিল্ক ইউনিয়ন লিমিটেড” সংক্ষেপে “আমুল” নামে সমবায় ইউনিয়ন গড়ে তোলেন। তিনি খেদার যে সমস্ত কৃষকদের দুগ্ধ প্রক্রিয়াকরণ এবং বিক্রি করার জন্য  এনেছিলেন, তাদের কাজে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে দেননি। তারা রাজধানীতে বসে থাকা রাজনৈতিক শ্রেণীর কর্মচারী বা আমলাদেরও তাদের হস্তক্ষেপ থেকে বিরত রাখেন। ত্রিভুবনদাসের সততা এবং কঠোর পরিশ্রম ডক্টর কুরিয়েনকে অত্যন্ত উৎসাহিত করেছিল। ডক্টর কুরিয়েন তার বন্ধু এবং দুগ্ধ বিশেষজ্ঞ এইচ এম দলায়া গরুর দুধের পরিবর্তে মহিষের দুধ থেকে স্কিম মিল্ক পাউডার এবং কনডেন্সড মিল্ক তৈরির একটি প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করেন। তার অনুরোধে [[জওহরলাল নেহেরু | পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু]] ভারতের প্রথম মিল্ক পাউডার প্লান্ট উদ্বোধন করেন। <ref name=”abp”>{{ওয়েব উদ্ধৃতি|শিরোনাম=ডুডলে আজ মিল্কম্যান ভার্গিস কুরিয়েন, তার সম্পর্কে অজানা ১০ তথ্য|ইউআরএল=https://www.anandabazar.com/india/google-doodle-pays-tribute-to-milkman-verhese-kurien-dgtl-1.249352|সংগ্রহের-তারিখ=২০২২-০৯-১১}}</ref> পরবর্তীতে [[ লাল বাহাদুর শাস্ত্রী |প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীও]] আমুলের প্ল্যান্টের উদ্বোধনে ডক্টর কুরিয়েনকে তার অসামান্য অবদানের জন্য অভিনন্দন জানান এবং নিজে উদ্যোগী হয়ে ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে ন্যাশনাল ডেয়ারি ডেভেলপমেন্ট বোর্ড তথা ‘এনডিডিবি’ গঠন করে ডক্টর ভার্গিস কুরিয়েনের প্রশংসনীয় ব্যক্তিত্বের কথা মাথায় রেখে তাকে কর্ণধার করেন দেন।

১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে কুরিয়েনের সহায়তায় ‘এনডিডিবি’ ‘অপারেশন ফ্লাড’-নামে সারা রাজ্যের সমস্ত দুগ্ধ সমবায়গুলিকে এক ছাতার নীচে নিয়ে আসেন। ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে গড়ে তোলেন ‘গুজরাট কো-অপারেটিভ মিল্ক মার্কেটিং ফেডারেশন’। যার ফলে “আমুল” ‘আনন্দ’ এর চৌহদ্দি ছাড়িয়ে সারা ভারতে অদ্বিতীয় ব্র্যান্ড – হল “দ্য টেস্ট অফ ইন্ডিয়া” বা “আমুল দুধ ভালবাসে ইন্ডিয়া”। কুরিয়েন ‘আমুল’-এর ঘন দুধ উৎপাদন ও তার বাজার এমন বৃদ্ধি করেছিলেন যে [[ভারত সরকার]] ঘন দুধের আমদানি নিষিদ্ধ করে দেয়। অপারেশন ফ্লাড এর সৌজন্যে সারা দেশে ৭২ হাজার গ্রামে দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত সামগ্রীর উৎপাদন শুরু হয়। ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে সমবায়ের পরিচালকদের যথাযথভাবে প্রশিক্ষণের জন্য গড়ে তোলেন ইনস্টিটিউট অব রুরাল ম্যানেজমেন্ট, আনন্দ। পরবর্তীতে সারা দেশে এমনকি বিদেশেও একই ধরনের সমবায়ের জন্য সাহায্য ও পরামর্শ দিয়ে গেছেন তিনি। ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধানমন্ত্রী [[আলেক্সেই কোসিগিন| অ্যালেক্সি কোসিগিন]] তাঁর সমবায়গুলি বিষয়ে পরামর্শের জন্য কুরিয়েনকে সোভিয়েত ইউনিয়নে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে পাকিস্তানের আমন্ত্রণে সেখানেও দুগ্ধ সমবায় প্রতিষ্ঠা করার পরামর্শ দেন। ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে [[পি. ভি. নরসিংহ রাও|পি ভি নরসিমা রাও]] এর সময় প্রতিবেশী রাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় ‘এনডিডিবি’র সহযোগিতায় যে দুগ্ধ সমবায় গড়ে ওঠে, সেখানেও কুরিয়েন মুখ্যভূমিকা পালন করেন। ১৯৯৮ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বের বাজারে ভারতের দুগ্ধজাত উৎপাদন প্রথম সারিতে আসে এবং বিশ্বের বৃহত্তম দুগ্ধ উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এর প্রধান কৃতিত্ব ছিল ভার্গিস কুরিয়েনেরই।

==সম্মাননা==

ডক্টর ভার্গিস কুরিয়েন তার জীবনব্যাপী বিপুল কর্মকাণ্ডের জন্য বিভিন্ন সময়ে দেশ-বিদেশের নানা সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। সেই পুরস্কারগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল –
{| class=”wikitable”
!বছর
!পুরস্কার বা সম্মান
!পুরস্কার প্রদানকারী সংস্থা
|-
|১৯৯৯
|[[পদ্মবিভূষণ]]
|ভারত সরকার
|-
|১৯৯৭
|অর্ডার অফ এগ্রিকালচারাল মেরিট
|মিনিস্ট্রি অফ এগ্রিকালচার  (ফ্রান্স)
|-
|১৯৯৩
|আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব
|ওয়ার্ল্ড ডেয়ারী এক্সপো
|-
|১৯৮৯
|বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার
|বিশ্ব খাদ্য পুরস্কার ফাউন্ডেশন
|-
|১৯৮৬
|[[ওয়াটলার পিস্ পুরষ্কার]]
| কার্নেগী ফাউন্ডেশন নেদারল্যান্ডস
|-
|১৯৮৬
|কৃষিরত্ন
|ভারত সরকার
|-
|১৯৬৬
|[[পদ্মভূষণ]]
|ভারত সরকার
|-
|১৯৬৫
|[[পদ্মশ্রী]]
|ভারত সরকার
|-
|১৯৬৩
|[[রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কার]]
|[[রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কার|রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কার ফাউন্ডেশন]]
|}
২০১৪ খ্রিস্টাব্দে , ভারতীয় ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে দেশের সমস্ত প্রধান দুগ্ধ উৎপাদন গোষ্ঠী সারা দেশে ২৬ নভেম্বর ডক্টর ভার্গিস কুরিয়েনের জন্মদিনকে জাতীয় দুধ দিবস হিসাবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়। [[মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি]] এবং সুইডিশ ইউনিভার্সিটি অফ এগ্রিকালচারাল সায়েন্সেস ছাড়াও বিশ্বের যে যে বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে সেগুলি হল –

* [[গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়]]

* নিউ ইংল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়, অস্ট্রেলিয়া

* সর্দার প্যাটেল বিশ্ববিদ্যালয়

* অন্ধ্রপ্রদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

* গুজরাট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

* রুরকি বিশ্ববিদ্যালয়

* কেরালা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

২০১৫ খ্রিস্টাব্দে ২৬ নভেম্বর ডক্টর ভার্গিস কুরিয়েনের ৯৪তম জন্মদিনে ডুডল ইন্ডিয়া সম্মান প্রদর্শন করে।<ref name=”abp”></ref>

== রচিত গ্রন্থসমূহ ==
ডক্টর ভার্গিস কুরিয়েন কয়েকটি গ্রন্থ রচনা করেছেন। সেগুলি হল-

*   ”আই টু হ্যাড অ্যা ড্রিম” (I too Had a Dream),

*   ”অ্যান আনফিনিশড ড্রিম” ( An Unfinished Dream) এবং

*   ”দ্য ম্যান হু মেড দ্য এলিফেন্ট ড্যান্স” ( The Man Who Made the Elephant Dance)

== বর্তমান সংস্কৃতিতে ==
প্রখ্যাত চলচিত্রকার [[শ্যাম বেনেগাল]] ”অপারেশন ফ্লাড”-এর চমকপ্রদ কাহিনী নিয়ে [[গিরিশ কারনাড]]-[[স্মিতা পাতিল |স্মিতা পাতিলকে]] নিয়ে তৈরি করেন হিন্দি ভাষায় এক বিখ্যাত চলচ্চিত্র ”[[মন্থন]]”। <ref name=”ABP”></ref>পরিচালক বেনেগাল অর্থনৈতিক অসুবিধায় পড়লে ডক্টর কুরিয়েন তার আমুল পরিবারের পাঁচ লক্ষ কৃষক-সদস্যদের দু-টাকা করে চাঁদা তুলে দিয়েছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাণে। চলচিত্রটি ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে মুক্তি পায়। সিনেমাটি উচ্চ প্রশংসিত হয়েছিল। সারা দেশে সমবায়ের মাধ্যমে শ্বেত বিপ্লবকে কার্যকরীরূপ দিতে কুরিয়েন স্থির করেন একজন পশুচিকিৎসক ও একজন দুগ্ধ প্রযুক্তিবিদ সিনেমাটিকে সঙ্গে নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রচারে ঘুরে বেড়াবেন। [[জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচী| জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচী তথা ইউনাইটেড নেশনস ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রাম]] লাটিন আমেরিকায় সমবায় গঠনে এই সিনেমাটিকে ব্যবহার করেছিল। ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে অমর চিত্র কথা  প্রকাশ করে ”ভার্গিস কুরিয়েন: দ্য ম্যান উইথ বিলিয়ন লিটার আইডিয়া” {{আইএসবিএন|978-93-508-5386-3}}

==তথ্যসূত্র==
{{সূত্র তালিকা}}

[[বিষয়শ্রেণী:মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাণিজ্য ও শিল্পে পদ্মশ্রী প্রাপক]]
[[বিষয়শ্রেণী:বাণিজ্য ও শিল্পে পদ্মভূষণ প্রাপক]]
[[বিষয়শ্রেণী:রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কার বিজয়ী]]
[[বিষয়শ্রেণী:কেরলের ব্যক্তি]]
[[বিষয়শ্রেণী:মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন শিক্ষার্থী]]
[[বিষয়শ্রেণী:মালয়ালী ব্যক্তি]]
[[বিষয়শ্রেণী:ভারতীয় প্রধান নির্বাহী]]
[[বিষয়শ্রেণী:ভারতীয় নাস্তিক]]
[[বিষয়শ্রেণী:২১শ শতাব্দীর ভারতীয় ব্যবসায়ী]]
[[বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর ভারতীয় প্রকৌশলী]]
[[বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর ভারতীয় ব্যবসায়ী]]
[[বিষয়শ্রেণী:২০১২-এ মৃত্যু]]
[[বিষয়শ্রেণী:১৯২১-এ জন্ম]]


Posted

in

by

Tags: