Lakshmikanta Manna:
| name = স্বামী সারদানন্দ মহারাজ
| image = Swami-saradananda.jpg
| caption = স্বামী সারদানন্দ
| religion = [[হিন্দুধর্ম]]
| birth_date = {{জন্ম_তারিখ|১৮৬৫|১২|২৩|df=y}}
| birth_place = [[কলকাতা]], [[বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি]], [[বৃটিশ ভারত]]
| birthname = শরৎচন্দ্র চক্রবর্তী
| death_date = {{মৃত্যু_তারিখ ও বয়স|১৯২৭|০৮|১৯|১৮৬৫|১২|২৩|df=y}}
| death_place = [[কলকাতা]], [[বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি]], [[ব্রিটিশ ভারত]]
| guru = [[রামকৃষ্ণ পরমহংস]]
| philosophy = [[অদ্বৈত বেদান্ত]]
| honors =
| footnotes =
| disciples = [[ভূতেশানন্দ]] ও অন্যান্যরা
}}
<div class=”quotebox pullquote floatright” style=”width:22em;
;”><div class=”quotebox-title” style=””>উদ্ধৃতি</div><blockquote class=”quotebox-quote left-aligned” id=”72″ style=””> ”নিঃস্বার্থ কর্মের মাধ্যমে মন শুদ্ধ হয়।” ”আর মন যখন পবিত্র হয় তখন তার মধ্যে জ্ঞান ও ভক্তি জন্মে।”</blockquote></div>
”’স্বামী সারদানন্দ”'(২৩ ডিসেম্বর ১৮৬৫ – ১৯ আগস্ট ১৯২৭) <ref name=”সংসদ”>[[সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত]] ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, ”সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান”, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, আগস্ট ২০১৬, পৃষ্ঠা ৭৭৮, {{আইএসবিএন|978-81-7955-135-6}}</ref> ছিলেন [[রামকৃষ্ণ পরমহংস| শ্রীরামকৃষ্ণদেবের]] অন্যতম প্রধান শিষ্য। তার পূর্বাশ্রমের তথা পিতৃদত্ত নাম ছিল শরৎচন্দ্র চক্রবর্তী। তিনি [[স্বামী বিবেকানন্দ|স্বামী বিবেকানন্দের]] সঙ্গে বেলুড় মঠ ও [[রামকৃষ্ণ মিশন| শ্রীরামকৃষ্ণ মিশন]] স্থাপন করেন এবং আমৃত্যু প্রথম সচিব ছিলেন। <ref>{{Cite web|last=donationsbm|language=en-US|title=Belur Math – Ramakrishna Math and Ramakrishna Mission Home Page|url=https://belurmath.org/|access-date=2022-07-03|website=Belur Math – Ramakrishna Math and Ramakrishna Mission}}</ref> তিনি কলকাতার বাগবাজারে উদ্বোধন বাড়ি প্রতিষ্ঠা করেন। এটি মূলত, তিনি শ্রী সারদা দেবীর কলকাতায় থাকার জন্য নির্মাণ করেছিলেন। এখান থেকে তিনি বাংলা পত্রিকা [[উদ্বোধন (পত্রিকা)| উদ্বোধন]] প্রকাশ করতেন। এখানেই তিনি রামকৃষ্ণদেবের জীবনীর উপর বাংলায় রচিত মহাগ্রন্থ- ”’শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ লীলাপ্রসঙ্গ”’ রচনা করেন। ইংরাজীতে অনূদিত হয়েছিল— ”শ্রী রামকৃষ্ণ, দ্য গ্রেট মাস্টার” নামে। পুনর্জন্মে সারদানন্দকে সেন্ট পিটার ( যিশু খ্রিস্টের সরাসরি প্রেরিত) হিসাবে গণ্য করা হয়। কথিত আছে যখন তিনি সেন্ট পিটার চার্চে গিয়েছিলেন, সেখানে তিনি সমাধিস্থ হন এবং বলেন আমি আমার অতীত মনে করতে পারছি এবং তিনি তার দিনলিপিতে লেখেন— ”’সেন্ট পিটার পুনরায়”’। “<ref>{{Citation|title=শ্রীরামকৃষ্ণ পার্ষদ স্বামী সারদানন্দ জী {{!}} স্বামী বলভদ্রানন্দ {{!}} Belur Math|url=https://www.youtube.com/watch?v=cSeGSvJhw_Y|language=en|access-date=2021-11-10}}</ref><ref>{{Cite web|first=Swami Saradananda Smritikatha by Swami Chetanada, Page number 59-60|title=|url=https://shop.advaitaashrama.org/product/swami-saradananda-smritikatha/|url-status=live}}</ref>
==জীবনী==
===জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন===
শরৎচন্দ্র চক্রবর্তীর জন্ম ১৮৬৫ খ্রিস্টাব্দের ২৩ ডিসেম্বর [[ব্রিটিশ ভারত| ব্রিটিশ ভারতের]] কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিটে একটি ধনী এবং গোঁড়া ব্রাহ্মণ পরিবারে। পিতা গিরীশচন্দ্র চক্রবর্তী ও মাতা নীলমণি দেবী। তাঁর পিতামহ ছিলেন ধর্মীয় স্বভাবের সংস্কৃত পণ্ডিত। শরৎচন্দ্রের ধনাঢ্য পিতার কলকাতার একটি ফার্মাসি ছিল। হিন্দুধর্মে ব্রাহ্মণের উপনয়ণের পর রীতি অনুযায়ী তিনি পারিবারিক মন্দিরে নিয়মিত পূজা করতেন। <ref name=”Ashrama”>”The Disciples of Sri Ramakrishna” (1943), published by Advaita Ashrama, Mayawati.</ref>{{rp|49}}তিনি তার ব্যক্তিগত জিনিসপত্র দিয়ে গরীব-দুঃখীকে সাহায্যও করতেন। <ref name=”Ashrama”/>{{rp|50}}শরৎচন্দ্র অসুস্থকে (সংক্রামক রোগী হলেও) শুশ্রূষার ব্যবস্থা করতেন।<ref>[http://www.rkmfiji.org/node/44 RKM Fiji] {{webarchive|url=https://web.archive.org/web/20120324204230/http://www.rkmfiji.org/node/44|date=24 March 2012}}</ref> তিনি কলেরায় মৃত মালিকের এক দরিদ্র দাসীর দেখাশোনা করেছেন এবং সেও কলেরায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলে তার শেষকৃত্যও তিনি সম্পন্ন করেছিলেন। <ref>Swami Chetanananda, They Lived with God, Vedanta Society of St. Louis, St. Louis, 1989.</ref>
মেধাবী শরৎচন্দ্র ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার হেয়ার স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষা পাশের পর [[সেন্ট জেভিয়ার’স কলেজ, কলকাতা|সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে]] ভর্তি হন। ছাত্রবস্থাতেই তিনি ব্রাহ্ম নেতা [[কেশব চন্দ্র সেন|কেশব চন্দ্র সেনের]] প্রভাবে আসেন এবং ব্রাহ্মসমাজের সদস্যও হন।
===রামকৃষ্ণের প্রভাব===
[[চিত্র:Vivekananda_Baranagar_1887.jpg|সংযোগ=//upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/0/01/Vivekananda_Baranagar_1887.jpg/250px-Vivekananda_Baranagar_1887.jpg|থাম্ব|250×250পিক্সেল| 1887 সালের 30 জানুয়ারি কলকাতার [[বরানগর মঠ|বরানগর মঠে তোলা]] গ্রুপ ছবি।]]
”’স্থায়ী”’ : (বামদিক হতে ডাইনে) শিবানন্দ, রামকৃষ্ণানন্দ, [[স্বামী বিবেকানন্দ|বিবেকানন্দ]], রানধুনি, দেবেন্দ্রনাথ মজুমদার, [[মহেন্দ্রনাথ গুপ্ত]] (শ্রী এম), [[স্বামী ত্রিগুণাতীতানন্দ|ত্রিগুণাতিতানন্দ]], এইচ.মুস্তাফি</br> ”’উপবিষ্ট”’: (বামদিক হতে ডাইনে) নিরঞ্জনানন্দ, সারদানন্দ, হুটকো গোপাল, [[স্বামী অভেদানন্দ|অভেদানন্দ]] ।
কিন্তু ১৮৮৩ খ্রিস্টাব্দে অক্টোবর মাসে আঠারো বৎসর বয়সে তিনি খুড়তুতো ভাই শশিভূষণ (যিনি পরে স্বামী রামকৃষ্ণানন্দ হন) ও আরো অন্যদের সঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণদেবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দক্ষিণেশ্বরে যান। শ্রীরামকৃষ্ণের তীব্র বৈরাগ্যের উপদেশ শরতের জীবনে এক অভিনব আলোকসম্পাত করে। ফলে শরৎচন্দ্র প্রতি বৃহস্পতিবার রামকৃষ্ণের সঙ্গে দেখা করার জন্য দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে যেতেন। ক্রমে আরও ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত হওয়ার সঙ্গে তিনি আধ্যাত্মিক অনুশীলনের দিকনির্দেশ পেতে শুরু করেন। একবার রামকৃষ্ণদেব তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “আপনি কীভাবে ঈশ্বরকে উপলব্ধি করতে চান?” শরৎ উত্তর দেন, “আমি ধ্যানে ভগবানের কোনো বিশেষ রূপ দেখতে চাই না। আমি তাকে জগতের সকল প্রাণীর মধ্যে উদ্ভাসিত দেখতে চাই।”<ref name=”Ashrama”/>{{rp|55}}
শ্রীরামকৃষ্ণের সপ্রেম ব্যবহার শরৎকে আরও দৃঢ়তর রূপে দক্ষিণেশ্বরে আকর্ষণ করে। কোন কোন দিন রাতে দক্ষিণেশ্বরে থেকে যেতেন। গভীর রাত্রে ঠাকুর তাকে পঞ্চবটী,বেলতলা, অথবা ৺ভবতারিণীর নাট মন্দিরে ধ্যান করতে পাঠাতেন। শেষে শ্রীরামকৃষ্ণদেবের আকর্ষণে পিতামাতার আশীর্বাদ নিয়েই তিনি গৃহত্যাগ করেন।
শরৎচন্দ্র ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে এফ.এ তথা ফার্স্ট আর্টস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তার পিতার ইচ্ছা ছিল, শরৎচন্দ্র ডাক্তারি পড়ুক। নরেন্দ্রনাথের সুপারিশে তিনি ডাক্তারি পড়তেও থাকেন। কিন্তু যখন শুনলেন রামকৃষ্ণ গুরুতর অসুস্থ, তিনি পড়াশোনার ছেড়ে দিয়ে নরেন্দ্র, রাখাল, কালী ,শশী প্রমুখ বারো জন যুবকের সঙ্গে প্রথমে শ্যামপুকুরে এবং তারপরে কাশীপুর বাগানবাড়িতে রামকৃষ্ণের শুশ্রূষায় নিয়োজিত হন এবং এই সময়েই তিনি সন্ন্যাসে দীক্ষিত হন। রামকৃষ্ণদেবের প্রয়াণের পর, শরৎ প্রথমে শিবানন্দ তার বাড়িতে ফিরে আসেন কিন্তু তারপর তার খুড়তুতো ভাই শশিভূষণ ও তার অন্যান্য ভাই শিষ্যদের সঙ্গে [[বরানগর মঠ| বরানগর মঠে]] যোগ দেন। ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দে সংসার ত্যাগ করেন। <ref name=”সংসদ” />
===বিবেকানন্দের সঙ্গে সম্পর্ক===
শরৎচন্দ্র যখন নরেন্দ্রনাথ দত্তকে প্রথম দেখেন তখন তিনি রামকৃষ্ণদেবের সান্নিধ্যে আসেন নি এবং নরেনকে তার আত্মাভিমানী বলেই মনে হয়েছিল। তবে পরবর্তীতে রামকৃষ্ণের কাছে নরেন্দ্রনাথের সম্পর্কে সপ্রশংস কথাবার্তায় তার সে ভ্রম দূর হয় তাদের সম্পর্ক শীঘ্রই ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বে পরিণত এবং আজীবন তারা সে বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন।
নরেন্দ্রনাথের সুপারিশেই শরৎচন্দ্র [[মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল, কলকাতা|কলকাতা মেডিকেল কলেজে]] ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে স্বামী বিবেকানন্দের আহ্বানে লন্ডনে গিয়ে বেদান্ত প্রচার করেন।<ref name=”সংসদ”/>[[যুক্তরাষ্ট্র| আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রেও]] বেদান্ত প্রচারে তিনি স্বামীজির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করে স্বামী বিবেকানন্দ যখন [[রামকৃষ্ণ মিশন]] শুরু করেছিলেন, তখন শরৎ তথা স্বামী সারদানন্দকে মিশনের প্রথম সম্পাদক পদে রেখেছিলেন। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রথম অধ্যক্ষ [[স্বামী ব্রহ্মানন্দ| স্বামী ব্রহ্মানন্দের]] মৃত্যুর পর, যখন সারদানন্দকে পরবর্তী সংঘাধ্যক্ষ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়, তখন তিনি প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন যে, [[স্বামী বিবেকানন্দ]] তাকে যে সচিব পদ প্রদান করেছিলেন, তিনি সেই পদেই থাকবেন।
===বিচরণকারী তপস্বীর জীবন===
[[বরানগর মঠ|বরানগর মঠে]], তরুণ সন্ন্যাসী শিষ্যরা তপস্যা এবং তপস্যার কঠোর জীবনযাপনের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করেন। শরৎচন্দ্র প্রায়ই দক্ষিণেশ্বরে ধ্যান করতে যেতেন, কখনও একা, কখনও বা নরেন্দ্রনাথের সঙ্গে। শরৎ স্বেচ্ছাশ্রমে ঝাড়ু দেওয়া, মঠ ও প্রাঙ্গণ পরিষ্কার করা এবং কাপড় ইত্যাদির ধোয়ার পাশাপাশি কোনও অস্বচ্ছল ভাই শিষ্যের যত্ন নেওয়া ইত্যাদি সমস্ত কাজ বাচবিচার ছাড়াই করতেন।
তরুণ শিষ্যরা আনুষ্ঠানিক সন্ন্যাস বা ত্যাগের পর শরৎকে “স্বামী সারদানন্দ” নাম দেওয়া হয়।
স্বামী সারদানন্দ প্রথমে পুরী এবং তারপর বেনারস, অযোধ্যা এবং ঋষিকেশ সহ উত্তর ভারতে ভ্রমণ করেন। তিনি হিমালয়ের তিনটি পবিত্র তীর্থস্থান গঙ্গোত্রী, কেদারনাথ এবং বদ্রীনাথেও ভ্রমণ করেছিলেন। এই তীর্থযাত্রার সময় তাকে কখনও কখনও খাবার ছাড়া এমনকি আশ্রয়হীন অবস্থায় বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছিল। <ref name=”Ashrama”/>{{rp|67}}
কেদারনাথ, তুঙ্গানাথ এবং বদ্রীনাথ পরিদর্শন করার পর, ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে সারদানন্দ আলমোড়ায় আসেন এবং সেখানে লালা বদ্রিনাথ শাহ নামে এক ভক্তের আশ্রয়ে থাকেন। তিনি সেখানে বিবেকানন্দের সাক্ষাৎ লাভে একসঙ্গে গাড়ওয়ালের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। সেখান থেকে তিনি মুসৌরির কাছে রাজপুরে আসেন এবং তুরিয়ানন্দের সাথে দেখা করেন। তুরিয়ানন্দের সঙ্গে তিনি কেদারনাথে গিয়েছিলেন। এরপর তিনি ঋষিকেশে যান এবং সেখানে কনখলে এক গুরুভাই ব্রহ্মানন্দ বা রাখাল মহারাজের সাথে দেখা করেন। এর পরে, তিনি প্রথমে বিবেকানন্দের সাথে দেখা করতে মিরাট এবং তারপরে দিল্লিতে যান তার সাথে, যেখানে পরে তার ভাই শিষ্যদের থেকে আলাদা হয়ে যায়। মাত্র ছয় বছর পর, সারদানন্দ আবার বিবেকানন্দের সাথে দেখা করেন। তাঁর নিলামে, সারদানন্দ বেদান্ত প্রচারের জন্য লন্ডনে যান।
দিল্লী থেকে, তিনি বেনারসে যান এবং সেখানে কিছু সময়ের জন্য অবস্থান করেন, [[স্বামী অভেদানন্দ]], আরেক ভাই শিষ্যের সাথে সাক্ষাত করেন এবং একজন তরুণ সন্ন্যাসীকেও দীক্ষা দেন, যিনি পরে স্বামী সচ্চিদানন্দ নামে পরিচিত হন। তিনি বেনারসে রক্ত আমাশয় রোগে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দে বরানগর মঠে ফিরে আসেন। পরবর্তীকালে, সুস্থ হওয়ার পর তিনি শ্রী সারদা দেবীর জন্মস্থান জয়রামবাটিতে যান। পরে তিনি কলকাতায় ফিরে আসেন এবং ১৮৯২ খ্রিস্টাব্দে রামকৃষ্ণের মঠ দক্ষিণেশ্বরের কাছে একটি স্থান আলমবাজারে স্থানান্তরিত হয়।
১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে শিকাগোতে বিশ্ব ধর্মের সংসদে বিবেকানন্দের সাফল্যের খবর ভাইদের কাছে পৌঁছেছিল। বিবেকানন্দ তখন পশ্চিমে বেদান্ত প্রচার এবং ভারতে কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য অর্থ সংগ্রহের মিশনে তাঁর ভাই শিষ্যদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানান। সারদানন্দ তার ডাকে সাড়া দিয়ে ১৮৯৬ সালে লন্ডনে যাত্রা করেন।
===পাশ্চাত্যে বেদান্ত প্রচার===
স্বামী সারদানন্দ লন্ডনে কয়েকটি বক্তৃতা দেন কিন্তু শীঘ্রই তাকে বেদান্ত সোসাইটি প্রতিষ্ঠার জন্য নিউইয়র্কে পাঠানো হয়।<ref name=”Ashrama”/>{{rp|72}} তাকে তুলনামূলক ধর্মের গ্রিন্যাক্র কনফারেন্সে শিক্ষক হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল যেখানে তিনি বেদান্তের উপর বক্তৃতা এবং যোগের উপর ক্লাস দিয়ে তার কাজ শুরু করেছিলেন। সম্মেলনের শেষের দিকে তাকে ব্রুকলিন, নিউইয়র্ক এবং বোস্টনে বক্তৃতা করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। ব্রুকলিন এথিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনে তিনি হিন্দুদের নৈতিক আদর্শের উপর বক্তৃতা দেন। সংগঠিত উপায়ে বেদান্ত আন্দোলন চালাতে তিনি নিউইয়র্কে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দের ১২ জানুয়ারি তিনি ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন এবং পথে লন্ডন, প্যারিস এবং রোম পরিদর্শন করেন।
===রামকৃষ্ণ মিশন এবং তার অবদান===
স্বামী বিবেকানন্দ যখন রামকৃষ্ণ মিশন প্রথম প্রতিষ্ঠা করেন, তখন তিনি স্বামী সারদানন্দকে গণিত ও মিশনের সম্পাদক পদে রাখেন এবং আমৃত্যু ত্রিশ বৎসর তিনি ওই পদেই ছিলেন। প্রাশ্চাত্য থেকে ফিরে আসার পর, স্বামী সারদানন্দ বেদান্তের উপর কলকাতার অ্যালবার্ট হলে একাধিক বক্তৃতা দেন। সংগঠনের প্রথম দিকে তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনকারীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য ব্রিটিশ সরকারের সন্দেহের মধ্যে পড়েন। <ref>[http://www.eng.vedanta.ru/library/prabuddha_bharata/2007_Jan_the_contemplative_tradition_in_the_ramakrishna_order_4.php Prabuddha Bharat]</ref> সারদা দেবীর কার্যকরী নির্দেশনায় স্বামী সারদানন্দ তৎকালীন ভাইসরয়ের কাছে গিয়ে তার বিষয়টি উপস্থাপন করেন। এরপর সরকার বিরত হয়।
১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় প্লেগ ছড়িয়ে পড়লে রামকৃষ্ণ মিশন ত্রাণের আয়োজন করে। স্বামী সারদানন্দ [[ভগিনী নিবেদিতা| ভগিনী নিবেদিতা এবং]] মিশনের অন্যান্য সন্ন্যাসীভাইদের সহায়তায় ত্রাণ কাজে লিপ্ত হন।
১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দেই তিনি মিশনের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহের জন্য স্বামী তুরীয়ানন্দকে সঙ্গে নিয়ে গুজরাট ভ্রমণ করেন এবং [[আহমেদাবাদ]], [[জুনাগড়]], [[ভাবনগর]] ইত্যাদি সহ বিভিন্ন অঞ্চলে ব্যাপকভাবে ভ্রমণ করেন। তিনি হিন্দিতে বক্তৃতা দেন।
বিবেকানন্দের দ্বিতীয়বার পশ্চিমে প্রস্থানের পর, তিনি তরুণ সন্ন্যাসীদের প্রশিক্ষণও শুরু করেন।
১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দের ডিসেম্বরে তিনি আমন্ত্রণে [[ঢাকা]], [[বরিশাল]] ও [[নারায়ণগঞ্জ|নারায়ণগঞ্জে]] যান এবং সেখানে [[অশ্বিনীকুমার দত্ত|অশ্বিনী কুমার দত্তের]] বাড়িতে অবস্থান করেন । তিনি অনেক বক্তৃতাও দিয়েছেন।
কলকাতায় ফিরে আসার পর, তিনি তাঁর কাকা ঈশ্বরচন্দ্র চক্রবর্তীর নির্দেশনায় তান্ত্রিক উপাসনার প্রতি আগ্রহী হন। এই অভিজ্ঞতার পর তিনি “ভারতে শক্তি পূজা” বা “ভারতে দেবী মায়ের পূজা” নামে একটি বই লেখেন।
১৯০২ খ্রিস্টাব্দে, বিবেকানন্দের মৃত্যুর পর, সারদানন্দ বেলুড় মঠের দৈনন্দিন বিষয়গুলি পরিচালনার কাজ শুরু করেন। ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দের জানুয়ারিতে [[ ত্রিগুণাতীতানন্দ]] কর্তৃক শুরু করা বাংলা পত্রিকা [[উদ্বোধন (পত্রিকা)|উদ্বোধন]]-এর সম্পাদনা ও প্রকাশের কাজটিও গ্রহণ করেন। তিনি নিবন্ধ রচনা ছাড়াও, তহবিল সংগ্রহের ব্যবস্থা করেছিলেন। তার সক্রিয়তায় ও তত্ত্বাবধানে ধীরে ধীরে পত্রিকাটির আর্থিক সুস্থতা ফিরে আসে। তিনি ঋণ নিয়ে কলকাতায় সারদা মায়ের জন্য একটি বাড়ি তৈরি করেছিলেন এবং সেই ঋণ পরিশোধের জন্য তাঁর মহান রচনা “শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ লীলাপ্রসঙ্গ” ( ইংরাজীতে অনূদিত হয় শ্রী রামকৃষ্ণ, দ্য গ্রেট মাস্টার ” নামে) লেখা শুরু করেন। সংগৃহীত অর্থে ভবন নির্মাণ শুরু হয় এবং ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে নতুন ভবনে [[উদ্বোধন (পত্রিকা)| উদ্বোধন]]-এর অফিস চালু হয়। এই বাড়িটির একাংশ ব্যবহৃত হত [[রামকৃষ্ণ পরমহংস|রামকৃষ্ণ পরমহংসের]] পত্নী তথা রামকৃষ্ণ মিশনের সংঘজননী সারদা দেবীর কলকাতা বাসভবন হিসাবে।
১৯০৯ খ্রিস্টাব্দ মানিকতলা বোমা মামলার দুই সহ-অভিযুক্ত, দেবব্রত বসু এবং শচীন্দ্রনাথ সেন, তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ছেড়ে দিয়ে রামকৃষ্ণ আদেশে যোগ দিতে আসেন। প্রবীণ সন্ন্যাসীদের বিরোধিতা এবং ব্রিটিশ সরকারকে অপমান করার ঝুঁকি সত্ত্বেও, সারদানন্দ সম্পূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং তাদের উভয়কেই আদেশে গ্রহণ করেন এবং তার অবস্থান ব্যাখ্যা করার জন্য উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করেন।
১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে বর্ধমান জেলায় বন্যা দেখা দিলে, তাঁর নেতৃত্বে রামকৃষ্ণ মিশন তহবিল সংগ্রহ, ত্রাণের কাজ কাজ সংগঠিত করেন।
১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে, তিনি গয়া, বেনারস, বৃন্দাবনে তীর্থযাত্রার জন্য যান এবং দু-মাস পর ফিরে আসেন।
১৯২০ খ্রিস্টাব্দে [[সারদা দেবী]] এবং ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে [[স্বামী ব্রহ্মানন্দ|ব্রহ্মানন্দের]] মৃত্যুর পর , সারদানন্দ ধীরে ধীরে সক্রিয় কাজ থেকে সরে আসেন। <ref name=”Ashrama”/> {{rp|92}} তবে সেসময় তাঁর একমাত্র কাজ ছিল সারদা দেবীর জন্য জয়রামবাটিতে একটি এবং বেলুড় মঠে আরেকটি মন্দির নির্মাণ। বেলুড় মঠের মন্দিরটি ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত হয়েছিল এবং জয়রামবাটিতে ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিলে উদ্বোধন করা হয়েছিল।
১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে বেলুড় মঠে সারা বিশ্বের রামকৃষ্ণ মঠ এবং মিশনে সন্ন্যাসীদের এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই সম্মেলনে, সারদানন্দ স্বাগত ভাষণ দেন এবং তিনি আত্মতুষ্টির বিপদ সম্পর্কে সতর্ক হওয়ার এবং প্রতিষ্ঠাতা সন্ন্যাসীদের আদর্শ অবিচল থাকার আহ্বান জানান। <ref name=”Ashrama”/>{{rp|97}} সম্মেলন শেষে, তিনি মিশনের প্রতিদিনের কাজ পরিচালনার জন্য একটি কমিটি নিযুক্ত করেন। এই সম্মেলনের পরে, তিনি প্রায় সক্রিয় জীবন থেকে অবসর নেন এবং ধ্যান উপাসনা মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করেন।
===সারদা দেবীর দায়িত্ব===
স্বামী যোগানন্দের দেহাবসানের পর স্বামী সারদানন্দ সংঘজননী শ্রীশ্রীসারদা মায়ের প্রধান সেবকরূপে পরিগণিত হন। শ্রীশ্রীমায়ের সমস্ত দেখাশোনা করতেন বলে শ্রীমা বলতেন “শরৎ আমার ভারী”।<ref>Gospels of Holy Mother, by Udbodhan publishers</ref>১৯০২ খ্রিস্টাব্দে ত্রিগুণাতীতানন্দ [[যুক্তরাষ্ট্র| আমেরিকায়]] গেলে [[উদ্বোধন (পত্রিকা)|উদ্বোধন পত্রিকার]] সমস্ত দায়িত্ব এসে পড়ে। পত্রিকাটির পরিচালনার সময়, তিনি সারদা দেবীর জন্য একটি বাড়ি নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন, কেননা সেই সময় মাকে কলকাতায় সাধারণ ভক্তদের বাড়িতে থাকতে হয়েছিল। তিনি বাগবাজার এলাকায় একটি বাড়ি কিনেছিলেন এবং এর নীচের তলায় পত্রিকার প্রকাশনা ও পরিচালনার জন্য ব্যবহার করতেন এবং উপরের তলায় সারদা দেবী ও তাঁর ভক্তদের আবাসস্থল এবং তাঁর মন্দির। তখন এটি “মায়ের বাড়ি” নামে পরিচিত ছিল এবং এখন এটি “উদ্বোধন বাড়ি” নামে পরিচিত। [[সারদা দেবী]] এই বাড়িতে প্রথমবারের মতো আসেন ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দের ২৩ মে। সারদানন্দ তাঁর খুব ভক্ত ছিলেন এবং নিজেকে তাঁর “দারোয়ান” বলতেন। তিনি সঙ্গিনীগণ-সহ শ্রীমা ও তাঁর নানা সমস্যাসঙ্কুল পরিবারের সব দায়-দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই সঙ্গে যোগিন মার কন্যা গণুর অকাল মৃত্যুর পর তাঁর তিন নাবালক পুত্রের দায়িত্ব, তার পরিবারেরও দেখাশোনা করতেন। তিনি স্বেচ্ছায় আর্থিক পাশাপাশি অন্যান্য দায়িত্ব বহন করেন। যদি তিনি তার জন্মস্থান জয়রামবাটিতে থাকার সময় অসুস্থতায় ভোগেন,স্বামী সারদানন্দ তার চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের সাথে আসতেন। জয়রামবাটিতে তিনি গুরুতর অসুস্থ হলে তিনি তাকে কলকাতায় আনার ব্যবস্থা করেন, যেখানে তিনি পাঁচ মাস চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি মারা যাওয়ার পর জয়রামবাটিতে তার মন্দির ও উপাসনালয় নির্মাণের সমস্ত দায়িত্বও নিয়েছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি তার পরিবারের সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে থাকেন।
== দেহাবসান ==
স্বামী সারদানন্দ ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দ হতে কিডনির সমস্যাসহ অন্যান্য বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে সক্রিয় কর্মজীবন থেকে অবসর নেওয়ার পর তাঁর শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দের ৬ আগস্ট, তিনি অ্যাপোলেক্সি বা সন্ন্যাস জাতীয় রোগে আক্রান্ত হন এবং পরবর্তীতে তার কোন চেতনা পুনরুদ্ধার হয়নি, শেষে ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দের ১৯ আগস্ট তার দেহাবসান ঘটে।
===সহানুভূতি এবং দয়া===
সারদানন্দ তার শান্ত বিচার, ধৈর্য এবং প্রেমময় হৃদয়ের জন্য পরিচিত ছিলেন। <ref name=”Ashrama”/>{{rp|73}} তিনি একটি মিষ্টি এবং কোমল ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন যা তাকে ভারতে এবং পশ্চিমে অনেক ভক্ত এবং বন্ধুদের জিতেছিল। কথিত আছে, একদিন রামকৃষ্ণ পরমানন্দে যুবক শরতের কোলে বসে বলেছিলেন, আমি পরীক্ষা করছিলাম তিনি কতটা ভার বহন করতে পারেন। <ref name=”Ashrama”/>{{rp|75}} এছাড়াও তিনি বেশ কিছু মানসিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য অত্যন্ত সহানুভূতিশীল ছিলেন, যাদের তিনি সরবরাহ করেছিলেন। এছাড়াও তিনি তার ভাই শিষ্যদের এবং অনেক সাধারণ ব্যক্তি অসুস্থ হলে তাদের যত্ন নেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তিনি সবার কথা মনোযোগ সহকারে শুনতেন এবং সবার মতামতকে গুরুত্ব দিতেন। অন্যদের অনুভূতির প্রতিও তিনি অত্যন্ত সংবেদনশীল ছিলেন।
== সাহসিকতা এবং উদাসীনতা ==
তাকে নির্ভীক প্রকৃতির বলা হয়। কাশ্মীরের একটি ঘটনায় যখন তিনি যে কোচের ঘোড়ায় ভ্রমণ করছিলেন তার ঘোড়াটি একটি অতল গহ্বরে পড়ে গিয়েছিল, সে রক্ষা পেয়েছিল, কিন্তু তিনি কখনই তার দৃঢ়তা হারাননি এবং পরে বলেছিলেন যে সে ঘটনার একজন উদাসীন পর্যবেক্ষক ছিলেন। <ref>[http://www.abuddhistlibrary.com/Buddhism/H%20-%20World%20Religions%20and%20Poetry/World%20Religions/From%20the%20Indian%20Tradition/Teachers%20from%20the%20Indian%20Tradition/The%20Direct%20Disciples%20of%20Sri%20Ramakrishna/Life%20and%20Teachings/life_directdisciples.htm#Swami_Saradananda BuddhistLibrary.com]</ref> তিনি যে জাহাজে করে লন্ডনে যাচ্ছিলেন সেটি ভূমধ্যসাগরে ঘূর্ণিঝড়ে ধরা পড়লে তিনি পুরো পর্বটি শান্তভাবে এবং বিচ্ছিন্নভাবে দেখেছিলেন এমনকি যখন তার সহযাত্রীরা মারাত্মকভাবে ভয় পেয়েছিলেন।<nowiki></ref></nowiki>{{rp|76}} তিনি যাদের সাথে কাজ করেছেন তাদের আপাত ত্রুটি ও দুর্বলতা সম্পর্কে তিনি উদাসীন ছিলেন।
== নিরপেক্ষতা এবং বিচ্ছিন্নতা ==
সারদানন্দ তার নিরপেক্ষ সিদ্ধান্তের জন্যও পরিচিত ছিলেন এবং তাই দ্বন্দ্ব সমাধানের প্রয়োজন ছিল। তিনি উদ্বোধন বাড়ির একটি ছোট্ট ঘরে “শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ লীলা প্রসঙ্গ” বইটি রচনা করেন, যখন পত্রিকার কার্যক্রম পরিচালনা করেন, রামকৃষ্ণ মিশনের কাজ তদারকি করেন এবং পবিত্র মা ও ভক্তদের দেখাশোনা করেন, নিঃস্বার্থ ও বিচ্ছিন্নভাবে। ১৯২৬ খ্রিস্টাব্দে [[রামকৃষ্ণ মিশন|রামকৃষ্ণ মিশনের]] নতুন প্রশাসনিক সংস্থা গঠিত হওয়ার পর, সারদানন্দ মিশনের সমস্ত কার্যকলাপ থেকে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন এবং ধ্যান ও মননের জীবন গ্রহণ করেন।
== উত্তরাধিকার ==
একজন সংগঠক হিসেবে তিনি তার দক্ষতা প্রমাণ করেছেন। তাঁর মৃত্যুর সময়, সারা ভারতে এবং বিদেশে বহু [[রামকৃষ্ণ মিশন]] কেন্দ্র ছিল। কেন্দ্রের নিয়মিত কাজের পাশাপাশি ত্রাণমূলক কাজ এবং উদ্বোধন পত্রিকা প্রকাশ, বই ও প্রবন্ধ লেখা, অর্থের ব্যবস্থা করা, উচ্চাকাঙ্ক্ষী, তরুণ সন্ন্যাসী ও ভক্তদের আধ্যাত্মিক চাহিদা দেখাশোনা করা এবং দেখাশোনা করাও ছিল। পবিত্র মায়ের পরিবারের সদস্যদের প্রয়োজন পরে পবিত্র মায়ের মৃত্যুর পর নারী ভক্তরা তাঁর সান্নিধ্য পেয়েছিলেন। একবার একজন পরিচারক তাকে তার আধ্যাত্মিক উন্নতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, যার উত্তরে তিনি বলেছিলেন, আমরা কি দক্ষিণেশ্বরে ঘাস কেটেছিলাম? রামকৃষ্ণের সাথে তাঁর মেলামেশার সময়কাল উল্লেখ করে। তিনি নিজেই উল্লেখ করেছেন যে তিনি আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতার উপর ”শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ লীলাপ্রসঙ্গ” (ইংরাজীতে অনূদিত ‘শ্রী রামকৃষ্ণ, দ্য গ্রেট মাস্টার’) গ্রন্থে যা কিছু লিখেছেন, তা সরাসরি উপলব্ধির মাধ্যমে হয়েছে, শ্রবণ থেকে নয়। <ref name=”Ashrama”/>{{rp|104}}
রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম, নরেন্দ্রপুরে সারদানন্দ ভবন নামে একটি ভবন এবং রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম, দেওঘরে সারদানন্দ ধাম নামে একটি ছাত্রাবাস রয়েছে।
==উদ্ধৃতি==
* নিঃস্বার্থ কর্মের মাধ্যমে মন শুদ্ধ হয়। আর মন যখন পবিত্র হয় তখন তার মধ্যে জ্ঞান ও ভক্তি জন্মে।
* যে কাজ ভগবান-উপলব্ধির পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় এবং অসন্তুষ্টি বাড়ায় তা খারাপ কাজ। আপনার এটি সম্পূর্ণরূপে বর্জন করা উচিত।
* রামকৃষ্ণ মিশন রাজনৈতিক আলোচনা সম্পর্কে ভাল বা মন্দ কোন মতামত প্রকাশ করতে পছন্দ করে না, কারণ গুরু আমাদের এই ধরনের কোন কিছু করার নির্দেশ দেননি এবং স্বামীজি মিশনকে এই ধরনের প্রচেষ্টা থেকে দূরে রাখতে বলেছিলেন। এই কারণেই রামকৃষ্ণ মিশন আধ্যাত্মিকতা এবং মানবতার সেবায় নিজেকে নিযুক্ত রেখে কাজ করে চলেছে।
* বর্তমানে অনেক ধর্মীয় সংগঠন আছে, কিন্তু কিছু দিন পরেই মানুষ তাদের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। এটার কারণ কি? এর কারণ হল, আমাদের কথা আমাদের চিন্তার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। দ্বীনের প্রথম ধাপ হল মূলের প্রতি আন্তরিক হওয়া। <ref>[http://www.rkmchennai.org/sar_7.html Saradananda, RKM Chennai] {{webarchive|url=https://web.archive.org/web/20070601031758/http://www.rkmchennai.org/sar_7.html|date=1 June 2007}}</ref>
== তথ্যসূত্র ==
{{সূত্র তালিকা}}
[[বিষয়শ্রেণী:রামকৃষ্ণ মিশনের সন্ন্যাসী]]
[[বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর ভারতীয় দার্শনিক]]
[[বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর হিন্দুধর্মীয় নেতা]]
[[বিষয়শ্রেণী:১৯শ শতাব্দীর ভারতীয় ধর্মীয় নেতা]]
[[বিষয়শ্রেণী:কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী]]
[[বিষয়শ্রেণী:১৯২৭-এ মৃত্যু]]
[[বিষয়শ্রেণী:১৮৬৫-এ জন্ম]]
[[বিষয়শ্রেণী:ভারতীয় হিন্দু ধর্মপ্রচারক]]