Mdmasumnstu: ← নতুন পৃষ্ঠা: কলেজ প্রতিষ্ঠার ইতিহাস শেরপুর জেলার শিক্ষা ব্যবস্থার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট কিছুটা সারা বাংলার মফঃস্বলের শিক্ষাব্যবস্থার প্রেক্ষা…
কলেজ প্রতিষ্ঠার ইতিহাস
শেরপুর জেলার শিক্ষা ব্যবস্থার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট কিছুটা সারা বাংলার মফঃস্বলের শিক্ষাব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে মতোই। দীর্ঘ রক্ত রঞ্জিত সংগ্রামের পর বাংলার সুনীল আকাশে উদিত হলো স্বাধীনতার লাল সূর্য। বিধ্বস্ত জনপদ, ধ্বংস প্রায় লোকালয়।বাংলাদেশের পাহাড়ী অঞ্চলের ছোট একটি থানা শেরপুর। যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিক্ষাব্যবস্থার সার্বিক অবকাঠামোর সবদিক থেকেই শেরপুর তখন অনেক পিছিয়ে থাকা একটি অঞ্চল। স্বাধীনতাত্তোর দেশের শিক্ষার হার বিশেষ করে নারী শিক্ষার হার কত কম হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। শেরপুর এলাকার মেয়েদের তখন কলেজে পড়াশোনা ছিলো কেবলই একটি স্বপ্নের ব্যাপার। এমনি একটা সময়ে, ১৯৭১ এর সর্যস্নাত বিজয়ের কতিপয় সৈনিক এবং বিদ্যানুরাগী ব্যক্তির প্রাণের ছোঁয়ায় সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শেরপুরের প্রাণকেন্দ্রে প্রয়াত জমিদার গোপাল দাস চৌধুরীর পরিত্যক্ত বসতবাড়ির নিকুঞ্জ ছায়ায় অবহেলিত জনগোষ্ঠীর নারী শিক্ষার বিকাশের লক্ষ্যে ১৯৭২ সালের ২৭ শে জুলাই একটি স্বর্ণোজ্জল দিনে স্থাপিত হলো শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজ।স্বাধীনতার পর পরই তৎকালীন মন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের ঢাকার বাসায় শেরপুরের গভর্নর জনাব নিজাম উদ্দীন আহমেদ, এডভোকেট আনিসুর রহমান ও পন্ডিত ফসিউর রহমান নানা আলোচনার পর প্রস্তাব উত্থাপন করলেন যে, শেরপুরে একটি মহিলা কলেজের খুবই প্রয়োজন। তার প্রস্তাবকে সমর্থন দিয়ে পুনরায় জনাব নিজামউদ্দীন আহমেদ বললেন, শেরপুরে একটি মহিলা কলেজ হতেই হবে এবং তাৎক্ষনিকভাবে প্রিন্সিপাল হিসাবে তোফাজুল হোসেন মোক্তার সাহেবের জ্যেষ্ঠ কন্যা ময়মনসিংহ মুসলিম গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শাহজাদী জাহানারার নাম প্রস্তাব করা হয়। শাহজাদী জাহানারা আপার মেধা, শিক্ষানুরাগ, কর্মদক্ষতা, প্রশাসনিক নৈপুণ্য ইত্যাদি মূল্যায়ন করেই শেরপুরের সুশীল সমাজ তাকে প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসেবে এই মহিলা কলেজটি গড়ার প্রস্তাব দেন। পরবর্তীতে গার্লস স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভায় কলেজ সম্পর্কে প্রাথমিক আলোচনা হয়। আলোচনার নিরিখে শেরপুরের লিডিং পারসনদের নিয়েই গার্লস স্কুলে সভা হয়। এ সভায় সভাপতিত্ত্ব করেন তৎকালীন চীফ হুইফ খান বাহাদুর ফজলুর রহমান। সভায় একটি মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি সাংগঠনিক কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন- ১. খান বাহাদুর ফজলুর রহমান, ২. জনাব মোঃ নিজামউদ্দীন আহমেদ, ৩. জনাব মোঃ আনিসুর রহমান, ৪. জনাব বিপ্লবী রবি নিয়োগী, ৫. এডঃ জনাব মোঃ আব্দুস সামাদ, ৬. জনাব মুহসীন আলী, ৭. জনাব খন্দকার মজিবর রহমান, ৮. জনাব মোঃ আব্দুর রশীদ, ৯. জনাব মোঃ ইমদাদুল হক হীরা, ১০. জনাব পন্ডিত মোঃ ফসিউর রহমান, ১১. জনাব মোঃ আমজাদ হোসেনে, ১২. জনাব সুরেন্দ্র মোহন সাহা, ১৩. জনাব মোঃ আহসান উল্লাহ, ১৪. জনাব শম্ভুনাথ পোদ্দার, ১৫. জনাব মোঃ আবু বকর মিয়া, ১৬. জনাব মোঃ ফছিহ উদ্দিন, ১৭ জনাব মোঃ দানেশ উদ্দিন আহমদ, ১৮. জনাব শৈলেন্দ্র চন্দ্র রায়, ১৯. জনাব মোঃ আব্দুর রহমান লিলু, ২০. জনাব মোঃ আবুল কাশেম সহ আরো অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত চিলেন। পরবর্তীকালে এ্ই কমিটি গভর্ণিং বডির কমিটিতে রূপ নেয়।আর গভর্ণিং বডির সভাপতি হন এডঃ আনিসুর রহমান। সেক্রেটারী হলেন জনাব মুহসীন আলী। গভর্ণিং বডির কমিটি ২৫ সদস্য বিশিস্ট ছিল।প্রাথমিক ভাবে এই কমিটি অস্থায়ীভাবে শেরপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়েই কেলেজের কা্যক্রম শুরু করেন। মহৎ শিক্ষা অন্তপ্রাণ শাহজাদী জাহানারা ১৯৭২ সালের জুলাই মাসে সদ্য প্রতিষ্ঠিত শেরপুর মহিলা কলেজে প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসাবে যোগ দেন।এরপর ১৯৭৩ সালে কলেজ পরিদর্শনের জন্য শিল্পমন্ত্রী সৈয়দ নজরুল ইসলাম, আইনমন্ত্রী শ্রী মনরঞ্জন ধর, অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ কলেজটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্ভোধন করেন এবং প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান দেন। মন্ত্রীবর্গ ছাত্রী নিবাসের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।১৯৭২ সালের গঠিত গভর্ণিং বডির কমিটিটি ১৯৭৭ পর্যন্ত বহাল/স্থায়ী ছিলো।১৯৭৭ সালে পরবর্তীতে যে গভর্ণিং বডি গঠিত হয় সেখানে সভাপতি ছিলেন এডঃ আনিসুর রহমান।
Go to Source