তামাটেমাথা দুধরাজ সাপ

Mahmud Kishorganj: ← নতুন পৃষ্ঠা: বাংলা নাম: তামাটে মাথা দুধরাজ সাপ ইংরেজি নাম: Copperheaded Trinket বৈজ্ঞানিক নাম: Coelognathus radiatus আঞ্চলিক নামঃ কোথাও কোথাও একে জাম্পিং সাপও বলে। বিষের ধরণ…


বাংলা নাম: তামাটে মাথা দুধরাজ সাপ
ইংরেজি নাম: Copperheaded Trinket
বৈজ্ঞানিক নাম: Coelognathus radiatus
আঞ্চলিক নামঃ কোথাও কোথাও একে জাম্পিং সাপও বলে।

বিষের ধরণ: সম্পূর্ণ নির্বিষ
খাদ্য তালিকা: এদের খাদ্যতালিকায় আছে টিকটিকি , ইঁদুর , ব্যাঙ , কাঠবিড়ালি ও ছোট পাখি।

স্বভাব : তামাটে মাথা দুধরাজ সাপ ৫ থেকে ১৫ টি ডিম দেয় । এদের স্বভাব নির্বির্ষ প্রজাতির এই সাপটি এর নামের সাথে দুধরাজ যুক্ত থাকলেও সাপটি কখনই দুধ খায় না । সাপটি নিযেকে আত্মরক্ষা করতে পছন্দ করে । কেউ তাকে উত্তেজিত করলে সে মাথা উঁচু করে ঘাড় উল্লম্ব ভাবে দেখতে অনেকটা জি ‘ S ’ অক্ষরের মতো দেহ পেচিয়ে গলা ফুলিয়ে মুখ হা করে তেড়ে আসে কামড়াতে । এরা যখন উত্তেজিত হয় তখন মাটি থেকে ১ মিটার প্রজন্ত মাথা দেহের উপর ভর করে ফোঁস ফোঁস করতে থাকে । এক সময় উত্তেজনা কমিয়ে পালানোর চেষ্টা করে ।এরা অতান্তত দ্রুত গতির সাপ।
আবাশস্থল: তামাটে মাথা দুধরাজ সাপ স্থলে বসবাসকারী সাপ । বন জঙ্গল ছাড়াও গোলাঘর , ক্ষেত খামার যেইখানে ইঁদুর বেশী থাকে ঐ জায়গা গুলাতে বেশী দেখা যায় । বর্তমান অবস্থা : তামাটে মাথা দুধরাজ সাপ তথা দুধরাজ সাপের সংখ্যা খুবই কম । আমাদের দেশের সব অঞ্চলেই কম বেশি দেখা যায় । এদের বৈশ্বিক অবস্থান হচ্ছে এরা বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত , দক্ষিণ চীন , লাওস , কম্বোডিয়া , ভিয়েতনাম , থাইল্যান্ড , মালয়েশিয়া , ইন্দোনেশিয়া , ব্রুনেই , সিঙ্গাপুর , হংকং , বার্মা ( মিয়ানমার ) ও নেপাল এ দেখতে পাওয়া যায়।
দৈহিক বৈশিষ্ট: তামাটে মাথা দুধরাজ সাপ ১৫ সেন্টিমিটার থেকে ২২৮ সেন্টিমিটার প্রজন্ত হয়ে থাকে । এই সাপের দেহের বেশিরভাগ অংশ তামাটে বর্ণযুক্ত । মাথা ঘাড় জুড়ে কালো রেখা এবং চোখের পিছনে থেকে ইংরেজি V এর মতো কালো রেখা রয়েছে । চোখের উপরের কালো রেখাটি ঘাড়ের রেখা এর সাথে যুক্ত হয়েছে । দেহের পেছনের অংশ ধূসর – বাদামী , হলুদ – বাদামি ও কালো ডোরা কাটা দাগ সারাদেহে আছে । গাড় বাদামী বা কালো দাগ গুলা লেজ পর্যন্ত চলে গেছে ।

প্রকৃতিতে দুধরাজ সাপের ভূমিকা : তামাটে মাথা দুধরাজ সাপের খাদ্যাভ্যাস উপকৃত করছে আমাদের কৃষিকে এবং ভারসাম্য রক্ষা করছে আমাদের প্রকৃতির । প্রতিবছর বীজতলা থেকে শুরু করে খাদ্যগুদাম পর্যন্ত ইঁদুরে বিনষ্ট করে উৎপাদিত খাদ্যশস্যের ৩০ শতাংশ।তাছারা ইঁদুর নিধনে যেই বিষ প্রয়োগ করা হয় সেই বিষের প্রভাবে অন্যান্য প্রাণীও আক্রান্তত হয়ে থাকে।এতে পরিবেশের মারাত্মক ভারসাম্য হানি হয় । এই বিষ খাদ্য বস্তুর মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে নানা বিধ মারাত্মক রোগের প্রভাব বিস্ততার করে , যা আর্থিক ও মানুষিক ভাবে ক্ষতি গ্রস্থ করে আমদেরকে । তাই আমরা কীটনাশক ও বিষ প্রয়গ থেকে সরে এসে যদি পরিবেশবান্ধব সাপ সংরক্ষণ করি তাহলে আমরা অনেক উপকৃত হবো । এতে প্রতিবছর ইঁদুর দমন অভিযানের মাধ্যমে অর্থ ব্যয় এর পরিমাণও কমে যাবে । ইঁদুরের কবল থেকে এদেশকে মুক্ত করতে চাইলে , সাপ উৎপাদন , সংরক্ষন ও প্রকৃতি থেকে সাপের বংশ বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে হবে এবং আমাদের দেশের সকল মানুষকে দুধরাজ সাপ সহ সকল সাপ সম্পর্কে সঠিক ধারনা প্রদান করে সাপ সংরক্ষণ করতে হবে যা কৃষি ও কৃষকের জন্য উপকারী।

কুসংস্কার ও লোক গল্প : মানুষের ধারণা এ সাপ গরুর দুধ খায় । হয়তো কখন সাপটি গোয়াল ঘরে গরুর দুধের বাটে ইঁদুর মনে করে মুখ দেয়া অবস্থায় গোয়ালা দেখে মনে করেছে সাপটি দুধ খাইতেছে , সেই থেকে প্রচলন হয়ে আসছে যে এই প্রজাতির সাপ দুধ খায় ।


Posted

in

by

Tags: